
পঙ্গপালের হানা নিয়ে সারা দেশ সন্ত্রস্ত। বিশেষ করে উত্তর ভারতের বেশ কিছু রাজ্যে ইতিমধ্যেই মাইলের পর মাইল চাষের খেতে শস্য ধ্বংস করছে তারা। চাষিরা প্রত্যেকে ফসল বাঁচাতে এক যুদ্ধে নেমেছেন যেন। কেউ দল বেঁধে খেতজুড়ে বাসন পেটাচ্ছেন, কেউ বা মোবাইলে ডিজে বাজাচ্ছেন। জোরালো শব্দ পঙ্গপালের শত্রু, সে কারণেই এই চেষ্টা।
এসবের মাঝেই দুরন্ত এক পঙ্গপাল-রোধী যন্ত্র আবিষ্কার করে ফেলেছেন এক উত্তর ভারতীয় চাষি। তাঁর কীর্তিটির ভিডিও তুলে সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করেছেন উত্তরপ্রদেশের ঝাঁসি জেলার পুলিশ সুপার রাহুল শ্রীবাস্তব। সেই ভিডিও টুইটারে পোস্ট হতেই রীতিমতো ভাইরাল তিনি। দু’কোটিরও বেশি মানুষ দেখেছেন ভিডিওটি। প্রশংসার বন্যা বয়ে গেছে নেট দুনিয়ায়।
ভিডিওটির ক্যাপশন হিসেবে শ্রীবাস্তব লেখেন, “আবিষ্কারের মূলে রয়েছে পঙ্গপাল!” বিষয়টিকে ‘জুগাড়’ বলে আখ্যা দেন তিনি। হিন্দিতে এই শব্দটির অর্থ হল, কোনও সমস্যা সমাধানের সহজ ও সুলভ বিকল্প উপায় বার করা। ঠিক যেমন এই উপায়টি। দেখুন ভিডিও।
দেখা যাচ্ছে, চাষজমির মাঝখানে একটি লম্বা পোলের মাথায় একটি বিশাল এয়ারপ্লেন বাঁধা। এই এয়ারপ্লেন তৈরি করী হয়েছে বাতিল হওয়া সিলিং ফ্যানের ব্লেড, প্লাস্টিকের বোতল, ক্যান, কার্ডবোর্ড– এসব গিয়ে। এটি পোলের মাথায় বনবন করে ঘুরছে এবং বিকট আওয়াজ হচ্ছে। যার ফলে পঙ্গপালের দল ধারে কাছে ঘেঁষবে না।
এর আগেও শ্রীবাস্তব একটি ভিডিও শেয়ার করেছিলেন, যার নাম ছিল ‘ডিজে গাড়ি’। সেটি উত্তরপ্রদেশের খেতগুলিতে জোরালো গান-বাজনা করতে করতে ঘুরছিল। পঙ্গপাল তাড়ানোর জন্য এও ছিল এক ‘জুগাড়’। শ্রীবাস্তব লিখেছিলেন, “ডিজে মানেই শুধু নাচ আর গান নয়। পঙ্গপাল তাড়াতেও ডিজের ভূমিকা অনস্বীকার্য। ওরা শব্দে ভয় পায়।” গত মাসে কেন্দ্রীয় কৃষি মন্ত্রক জানিয়েছিল, ইংল্যান্ড থেকে ১৫টি ওষুধ স্প্রে করার যন্ত্র আনানো হচ্ছে। সেগুলি দিয়ে পঙ্গপাল তাড়ানো যাবে সহজেই। কিন্তু এখনও আসেনি সে যন্ত্র। তাই স্থানীয় মানুষের স্থানীয় চেষ্টাই ভরসা।
Modern problem, requires modern solution. Local innovation at best for locusts. Brilliant idea. Via @upcoprahul pic.twitter.com/0q5G8hQrf8
— Parveen Kaswan, IFS (@ParveenKaswan) June 2, 2020
ইতিমধ্যেই মধ্যপ্রদেশ থেকে ছত্তীসগড়ের করিয়া জেলায় হানা দিয়েছে পঙ্গপালের ঝাঁক। সোমবার ছত্তীসগড় সরকার একথা জানিয়েছে। ছত্তীসগড়ের প্রতিটি জেলায় এখন কৃষি, অরণ্য, ফল চাষ ও রাজস্ব দফতরের অফিসারদের নিয়ে তৈরি হয়েছে বিশেষ টিম। তাদের কাজ পঙ্গপালের হানার ওপরে নজর রাখা। তাদের তাড়ানোর ব্যবস্থা করা। এম এস কেরকেট্টা বলেন, মহারাষ্ট্র, মধ্যপ্রদেশ এবং উত্তরপ্রদেশের সীমানায় নজর রাখা হচ্ছে। কারণ সেখানকার আকাশ দিয়ে ঢুকতে পারে পঙ্গপালের ঝাঁক।