
ভি’ক্ষা’র জীবন থেকে মুক্তি চান সুনামগঞ্জের সুলেকাবাদ ইউনিয়নের বাদেরটেক গ্রামের বাসিন্দা রজবুন নেছা (৯৫)। দুই মেয়েকে নিয়ে সুন্দর সংসার ছিল তার। কোনো কিছুর অভাব ছিল না। গরুর খামার, হাঁস, মুরগি, এমনকি ৬ শতক জায়গার ওপর ছিল তার বাড়ি।
শখ ছিল মেয়েদের উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত করার, কিন্তু স্বামীর চা’পে বড় মেয়ে তাজ নাহারকে ১৭ বছর বয়সেই বিয়ে দিয়ে দিতে হয়েছে। এর কয়েক বছর পর তার স্বামী মা’রা যান। এরপর ছোট মেয়ে জুনাকিকে নিয়ে ছিল তার সব স্বপ্ন। তাকে বানাতে চেয়েছিলেন ডাক্তার, কিন্তু সেই স্বপ্নও পূরণ হলো না।
৯ বছর বয়সে জুনাকির একটা পায়ে ক্যা’ন্সার ধ’রা পড়ে। এমনকি বড় মেয়ে তাজ নাহারের স্বামী কামাল উদ্দিন হৃ’দরো’গে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। ফলে স্বামী মারা যাওয়ায় মানসিক রোগী হয়ে যান তাজ নাহার। দুই মেয়েই এখন অসুস্থ। বড় মেয়ে মানসিক রোগী। ছোট মেয়ে ক্যান্সারে আক্রান্ত। চিকিৎসা করাতে অনেক টাকার প্রয়োজন। তাই তিনি তার সব কিছু একে একে বিক্রি করে দুই মেয়ের চিকিৎসা করাতে থাকেন।
বড় মেয়ে তাজ নাহার বর্তমানে অনেকটা সুস্থ। ছোট মেয়ে জুনাকির একটা পা কেটে ফেলে দেয়া হয়েছে। দুই মেয়ের চিকিৎসা করিয়ে আজ তিনি পথের ভিক্ষারি।
রজবুন নেছা বলেন, এক সময় আমার সব ছিল। কোনো কিছুর অভাব ছিল না, কিন্তু আজ আমার থাকার মতো একটা ঘর নেই। দুই মেয়ের চিকিৎসা করিয়ে সব বিক্রি করে দিয়েছি। তাতে আমার কোনো দুঃখ নেই। আমার দুই মেয়েই এখন সুস্থ আছে। আমার কোনো ছেলে নেই। সংসার চালানোর জন্য তাই ভোর সকালে নৌকা করে ভিক্ষা করার জন্য সুনামগঞ্জে আসতে হয়।
তিনি বলেন, ম’রা’র আগে ভি’ক্ষার জীবন থেকে মুক্তি পেতে চাই।