
যশোরের মেয়ে নাশিদ নিকিতা নিতান্ত শখের বসেই শুরু করেছিলেন শাড়ির ব্যবসা। শুরুতে বুঝতে পারেননি কতটা সাফল্য তাকে ঘিরে ফেলবে খুব অল্প সময়েই। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমবিএ করে একটি ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানিতে চাকরিও করেন তিনি। হঠাৎ করেই ইচ্ছা চেপে বসে শাড়ির ব্যবসার। সেটাও কোনো দোকান বা শোরুম খুলে নয়। ঘরে বসেই, অনলাইনে। এভাবেই মাত্র তিন মাসে তিনি ছয় লাখ টাকা অর্জন করেছেন নিজের পরিশ্রম আর মেধার সাহায্যে।
নিকিতা ছোটবেলা থেকেই নিজের স্বকীয়তায় বিশ্বাসী ছিলেন। নিজের ব্যবসা হবে একদিন এমন একটা আশা তার মনে সবসময়ই কোনো এক কোণে ছিল। সেখান থেকে সরেননি তিনি। চাকরিজীবনের সাফল্য তার ভালো লাগে তবুও নিজের কিছু একটাও তো দরকার এমন চিন্তাভাবনা থেকেই মাত্র আট হাজার টাকায় কয়েকটি শাড়ি কিনে এনেছিলেন। গল্পের শুরুটা সেখান থেকেই।
নিজের প্ল্যানমতই সবকিছু এগিয়ে নিয়েছেন তিনি। হুজুগে বাঙালির তালিকায় নিজেকে রাখেননি। নিজের মূল্যবান সময় থেকে শাড়ির ব্যবসার জন্যও সময় বের করলেন। নিজের শাড়ির মডেল হলেন নিজেই। ফেসবুকে পেইজ খুললেন ‘কাব্যকন্যা’ নামে। নিজেই নিজের ব্র্যান্ডিংয়ে অংশ নিলেন।
অপার বিস্ময়ে নিকিতা লক্ষ করলেন ৮ হাজার টাকায় কেনা শাড়িগুলো দুদিনেই শেষ হয়ে গেল। এরপর আরও শাড়ি বানাতে দিলেন তিনি। সঙ্গে যোগ করেছিলেন কিছু অর্থও। এরপর ঝড় বয়ে যায় তার পেজে। কাস্টমাররাও পজিটিভ রিভিউ দিতে শুরু করলেন। ব্যবসা? তত দিনে জমে ক্ষীর। আর পিছু তাকাতে হয়নি। প্রথম বিশ দিনেই এক লাখ টাকার শাড়ি বিক্রি হয়। এভাবে তিন মাসেই তিনি প্রায় ছয় লাখ টাকার বেশি শাড়ি বিক্রি করেন তিনি।
নিকিতার এই সাফল্যে রয়েছে চ্যালেঞ্জও। অর্ডার থেকে শুরু করে শাড়ি স্টক করা, ডেলিভারি, কুরিয়ার, এসবকিছুই তিনি একাই করেন। চাকরির পাশাপাশি এসব কিছু করতে হিমশিম খান নিকিতা। কিন্তু শাড়ির সাফল্য তাকে আরও পরিশ্রম করে নিজেকে নতুন উচ্চতায় নেওয়ার প্রেরণা জোগায় বারংবার।